প্রবাসী কাকার স্ত্রী🤩❤️‍🔥

 


গভীর রাতে গ্রামের বাড়িতে নিস্তব্ধতা নেমে এসেছিল। প্রবাসী কাকার স্ত্রী, বছর চল্লিশের মিনা বেগম, হঠাৎ তীব্র মাথা ব্যথায় কঁকাতে লাগলেন। বাড়িতে তখন ছিলেন শুধু তার সমবয়সী ভাতিজা , রফিক, আর মিনা বেগম। রফিকের স্ত্রী ও সন্তানেরা পাশের গ্রামে আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল। মিনার স্বামী, তাদের আপন কাকা, বহু বছর ধরে প্রবাসে কঠোর পরিশ্রম করছেন, একটাই স্বপ্ন - দেশে ফিরে এসে সুখের সংসার বাঁধবেন।


ব্যথায় কাতর মিনা বেগম রফিককে ডেকে বললেন, "বাবা রফিক, একটু মাথায় হাত বুলিয়ে দিবি? নারকেল তেল আর একটু জল এনে দে তো।"


রফিকের মনে দ্বিধা জাগল, তবুও কাকীর কষ্ট দেখে তেল আর জল নিয়ে এগিয়ে এল। মিনতি ভরা চোখে কাকা তাকে ধীরে ধীরে মাথা টিপে দিতে বললেন। রফিক প্রথমে সংকোচ বোধ করলেও, কাকীর ব্যথার তীব্রতা দেখে বাধ্য হলো।


কিন্তু নিয়তির পরিহাস অন্যরকম ছিল। মাথায় হাত বুলোতে বুলোতে মিনতি ভরা চাহনিতে রফিকও কেমন যেন দুর্বল হয়ে পড়ল। এক অপ্রত্যাশিত মুহূর্ত তৈরি হলো, যা দুজনের জীবনেই এক গভীর ক্ষত সৃষ্টি করলো। বয়সের ব্যবধান, সম্পর্কের मर्यादा - সবকিছু যেন তুচ্ছ হয়ে গেল এক নিষিদ্ধ আকর্ষণে।


তাদের গোপন সম্পর্ক ধীরে ধীরে গভীর হতে শুরু করলো। রফিক যখনই সুযোগ পেত, কাকীর কাছে ছুটে যেত। মিনার নিঃসঙ্গতা আর রফিকের অপরিণত আবেগ এক ভয়ংকর খেলায় মেতে উঠলো।


অবশেষে, প্রকৃতির নিয়মেই বিষয়টি ধরা পড়ল। রফিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তার অস্বাভাবিক আচরণ পরিবারের সদস্যদের নজরে আসে। কানাঘুষা শুরু হয়। রফিকের বড় ভাই, যিনি শহরে থাকেন, সব শুনে আঁতকে উঠলেন। তিনি তৎক্ষণাৎ ছোট ভাইকে ফোন করে বাড়িতে আসতে বললেন।


"তুই এক্ষুণি বাড়ি আয়," বড় ভাইয়ের কণ্ঠস্বর কঠিন, "তোর কাকীর সাথে তোর... সম্পর্ক হয়েছে।"


কথাটি যেন আকাশ থেকে পড়ল রফিকের মাথায়। ওদিকে, প্রবাসে থাকা কাকা এই ভয়ঙ্কর কথা জানতে পেরে স্তম্ভিত হয়ে যান। যে স্ত্রীকে তিনি তিলে তিলে ভালোবেসেছেন, যার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন, সে কিনা তার অনুপস্থিতিতে এমন জঘন্য কাজ করেছে!


এক মুহূর্তও আর অপেক্ষা করলেন না কাকা। রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে তিনি মিনাকে তালাক দিলেন। চোখের পলকে ভেঙে গেল তাদের সাজানো সংসার, তছনছ হয়ে গেল দীর্ঘদিনের স্বপ্ন।


রফিকের পরিবারে নেমে এলো শোকের ছায়া। ভাই ভাইয়ের কাছ থেকে দূরে সরে গেল, সম্পর্কের বাঁধন ছিঁড়ে গেল। যে কাকা তাদের এত স্নেহ করতেন, তার চোখে আজ শুধুই ঘৃণা।


এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের সমাজের জন্য এক গভীর শিক্ষা রেখে যায়। পারিবারিক সম্পর্কে শ্রদ্ধার গুরুত্ব অপরিসীম। বিশেষ করে কাকি ,ভাতিজা সম্পর্ক একটি পবিত্র বন্ধন, যেখানে সম্মান ও শালীনতা বজায় রাখা জরুরি। সামান্য দুর্বলতা বা অসতর্ক পদক্ষেপের কারণে একটি সুন্দর সংসার ভেঙে যেতে পারে, আত্মীয়তার বন্ধনে চির ধরিয়ে দিতে পারে।


আমাদের মনে রাখতে হবে, অনৈতিক সম্পর্ক কখনো সুখ বয়ে আনে না। বরং এটি কেবল ধ্বংস আর অনুশোচনা ডেকে আনে। তাই পারিবারিক মূল্যবোধকে সম্মান করা, বড়দের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত যা একটি সুস্থ ও সুন্দর সমাজকে কলুষিত করে। প্রতিটি সম্পর্কের মর্যাদা রক্ষা করাই মনুষ্যত্বের পরিচয়।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url